BoiPallab Group

পুফি - হুমায়ূন আহমেদ

 

পুফি - হুমায়ূন আহমেদ


"পুফি" গল্পের প্রধান চরিত্রের নাম পুফি। কুচকুচে কালো রঙের এক বিড়াল। শুধু লেজটা শাদা রঙের। তাকে ঘিরেই এই অবাস্তব জগতের মূল কাহিনি। আবুল কাশেম জোয়ার্দার সাহেব ছোট বেলা থেকেই পশুপাখি পছন্দ করেন না। তিন বছর বয়সে তার উপরে দুটি দাঁড়কাক ঝাঁপিয়ে পড়ার পর এবং একটি কাক তাকে জখম করার পর থেকেই সে পাখি অপছন্দ করেন। ক্লাস ফোরে পড়ার সময় তাকে একবার একটি কুচকুচে কালো রঙের কুকুর কামড়ায়। সব ছাত্র দৌড়ে পালাল, শুধু জামাল নামের ক্লাস ফাইভে পড়া এক ছেলে তাকে রক্ষা করার জন্য ছুটে এলো। তাকে বাঁচাতে গেলে কুকুরটি জামালকেও কামড়ে দেয়। তিনি ৭টি ইঞ্জেকশন দিয়ে সুস্থ হলেও জামাল সুস্থ হতে পারেনি। জামালের বাবার সে সামর্থ্য ছিলো না। ফলে জামাল জলাতঙ্কে ভুগে মারা যায়। কিন্তু জামাল জোয়ার্দার সাহেবের পিছু ছাড়েনি। বাসা খালি থাকলেই জোয়ার্দার সাহেব দেখেন জামাল তার ঘরে আপন মনে ঘুরছে এবং খেলছে। তার বয়স বাড়লেও জামালের বয়স বাড়েনি। মৃত্যু তার বয়সের গন্ডিটাকে আটকে দিয়েছে। এভাবেই সব চলছিলো। কিন্তু কিছু বছর পর, জোয়ার্দার সাহেবের মেয়ে অনিকার ছ'নম্বর জন্মদিনে তার মামা রঞ্জু তাকে একটি বিড়াল উপহার দেন। অনিকা তার নাম দেয় পুফি। পুফি আসার পর জোয়ার্দার সাহেবের সাথে ভিন্ন রকমের ঘটনার শুরু হয় । পুফি বাড়িতে না থাকলেও তিনি দেখতে পান একই রকমের একটি কালো বিড়াল। একই রকম বললে ভুল হবে। আসলে ঐ বিড়ালটা পুফির প্রতিচ্ছবির মতো উল্টো, ঠিক যেন মিরর ইমেজ। জোয়ার্দার সাহেব বিড়ালটির নাম দেন কুফি। ঘটনাগুলো এখানে থেমে গেলেই হয়তো ভালো হতো। এদিকে স্ত্রী সুলতানার সাথে তার মনোমালিন্য শুরু হয়। আবার সে তার মৃত কলিগ বরকতউল্লাহ সাহেবকে দেখতে পান আবার কথাও বলেন। নিজেকে তার মানসিক রোগাক্রান্ত বলে মনে হতে থাকে। হঠাৎ তার শায়লার কথা পড়ে। শায়লার সাথেও তার অতীত জীবনের কিছুটা ইতিহাস রয়েছে।  শায়লা একজন সাইকিয়াট্রিষ্ট । শায়লার পরামর্শে জোয়ার্দার সাহেব কুফি এবং বরকতউল্লাহর ছবি তুলেন। কিন্তু মৃত মানুষের ছবি তোলা কি আদৌ সম্ভব? শায়লা নিজেও বিভ্রান্তিতে পড়ে যান। তিনি তাই পরামর্শের জন্য মিসির আলির কাছে ছুটে যান। এরপর বেড়িয়ে আসে নতুন কিছু অদ্ভুত ঘটনা। এদিকে জোয়ার্দার সাহেবের অফিসে গিয়ে শায়লা জানতে পারেন বরকতউল্লাহ বেঁচে আছেন এবং তিনি অবিবাহিত। তাহলে সুলতানা এবং অনিকা কে ছিল? অপরদিকে রঞ্জুই বা কে ছিল? ছবির বিড়ালটিও বা কে ছিল? 
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে চাইলে আপনাকে পড়তে হবে "পুফি" বইটি। 

বইটি পড়তে পড়তে পাঠকের এক অদ্ভুত অনুভূতি হবে। যা আমারও হয়েছে। একবার মনে হবে এইটা সত্যি আবার পরেই তা হয়ে যাবে মিথ্যা। একটি রহস্যময় গোলক ধাঁধায় কিভাবে যে আপনি জড়িয়ে যাবেন তা হয়তো আপনি নিজেও বুঝতে পারবেন না। যেমনটা আমিও বুঝতে পারিনি।

বইয়ের নাম: পুফি
লেখক: হুমায়ূন আহমেদ
সিরিজ: মিসির আলি
প্রকাশনী: অনন্যা
মূল্য: ১৭৫
পৃষ্ঠা সংখ্যা:১০৩
গুডরিডস রেটিং: ৩.৪ 
ব্যক্তিগত রেটিং: ৪.৩

বই পর্যালোচক: খাদিজা আফরিন কান্তা



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন