BoiPallab Group

অপেক্ষা - হুমায়ূন আহমেদ

 

অপেক্ষা - হুমায়ূন আহমেদ


উপন্যাসটির মূল চরিত্র হলো সুরাইয়া ও তার ছেলে ইমন। সুরাইয়া যখন গর্ভবতী তখন একদিন হঠাৎ করেই ইমনের বাবা অর্থাৎ সুরাইয়ার স্বামী হাসানুজ্জামান নিখোঁজ হয়ে যায়। সুরাইয়া স্বামীর অপেক্ষা করতে থাকে। ফিরোজ তার ভাইয়ের খোজঁ করতে থাকে। কিন্তু  কোনো খোঁজ খবরই পাওয়া যায় না। এক সময় হাল ছেড়ে দেয় ফিরোজ। এদিকে জন্ম নিলো সুরাইয়ার মেয়ে সুপ্রভা।

স্বামীর অপেক্ষায় সুরাইয়া মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পরে। কেমন যেন অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে সে। ইমনের উপর এর প্রভাব পড়ে। তাকে পড়তে বসায় না। তার সাথে ভালো করে কথা বলে না। কথা বলে ধমক দিয়ে। এমনকি সে দুধের বাচ্চাটির(সুপ্রভা) সাথেও ভালো আচরণ করছে না। বাচ্চাটি কাঁদলে তাকে কোনো নিয়ে ঘুম পাড়ানো কিংবা আদর করার কোনো লক্ষ্মণই তার মধ্যে বিদ্যমান নয়। ফিরোজ এর প্রতিবাদ করলে সুরাইয়া ক্ষ্রীপ্ত হয়ে তার বড় ভাই জামিলুর রহমানের বাসায় চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ইমনের তার প্রিয় মানুষ ছোট চাচা ফিরোজকে ছেড়ে যাওয়ার কোন ইচ্ছে-ই নেই। কিন্তু সে তার মার ভয়ে মামার বাসায় যেতে রাজি হয়।

জামিলুর রহমানের বাসায় তারা থাকতে শুরু করে। ধীরে ধীরে সময় কাটতে থাকে। বড় হতে থাকে ইমন সুপ্রভারা।কিন্তু তাদের মা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারনে না। 

এক সময় সুরাইয়া অনেক চেষ্টার পর খোঁজ পায় তাদের সেই পুরোনো ভাড়া বাড়িটি যে তার স্বামী হাসানুজ্জামান থাকতো। তারপর ওই বাড়িতে গিয়ে ওঠে সুরাইয়ারা। তার ধারণা ইমনের বিয়ের রাতেই ফিরে আসবেন তার স্বামী। এসেই তিনি অবাক হবেন।সবকিছু আগের মতোই আছে। কিছু বড় হয়ে গেছে তার ছেলে।সে এখন বিবাহিত। পাশের বাড়ির কাজের মেয়ে মুন্নীর সাথে ইমনের বিয়ে দেওয়ার কথা ভাবতে থাকে সুরাইয়া।

এদিকে  ইমনের পড়াশোনা থেকে একেবারেই মন উঠে যায়। তার জেলাখাটা বড় ভাই শোভনের সাথে একবার মদ্যপান-ও করে সে। এমনকি সে তার অনার্স পরিক্ষা দেওয়াও বন্ধ করে দেয় সে। এই খবরটা চলে যায় মিতুর কানে। পান-চিনি হওয়ার পর সে তার বিয়ে ভেঙে দেয়। এবং সে বিয়ে করে ছোট থেকে ভালোবাসা সেই ছেলেটিকে, ইমনকে। মিতু যে ছোট থেকেই ইমনকে ভালোবাসতো তা বইটিতে বা উপন্যাসটিতে লক্ষ্যনীয়।

দেখতে দেখতে চলে এলো ইমনের বিয়ের রাত। বাসরঘর। সুরাইয়ার অপেক্ষা শেষ হয় না। আশা ছেড়ে দেয় সে। না মানুষটি বোধহয় আর আসবে না। সে মনে করতে থাকে তার এবং হাসানুজ্জামানের বিয়ের রাতের কথা। তখনই কলিং বেল বাজে। আরেকবার বাজলো। সুরাইয়া মনে মনে বলে এইতো কলিংবেল বাজলো। তাহলে ফিরে হলো তার স্বামী? অবসান ঘটলো তার অপেক্ষার? 
জানতে হলে অবশ্যই পড়তে হবে বইটি।

অবশেষে বলতে চাই,হুমায়ূন আহমেদ স্যারের লেখায় জাদু আছে। তিনি হলেন জাদুকর। তাই বরাবরের মতো এই বইটিও অতুলনীয়।

বইয়ের নাম: অপেক্ষা 
লেখক: হুমায়ূন আহমেদ
ব্যক্তিগত রেটিং: ১০/১০ 

বই পর্যালোচক: ইরফান আহমেদ সোহান
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন