BoiPallab Group

দ্য দা ভিঞ্চি কোড - ড্যান ব্রাউন

 

দ্য দা ভিঞ্চি কোড -  ড্যান ব্রাউন


পটভূমি:
বাংলাসহ প্রায় ৪৫টি ভাষায় অনূদিত হওয়া 'দ্য দাভিঞ্চি কোড' বইটিতে উঠে এসেছে এক রসস্যময় সত্য। দু’হাজার বছরের পুরনো সেই সত্যকে চিরতরে নির্মূল করার জন্যে একই দিনে চারজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। ইতিহাসের এমন এক সত্য যা জানাজানি হয়ে গেলে হাজার বছরের ইতিহাস লিখতে হবে একেবারেই নতুন করে, প্রতিষ্ঠিত ধর্মমতের ভিত্তি যাবে কেঁপে। সত্যটি লালন করে আসছে যে সিক্রেট-সোসাইটি তার সদস্য ছিলেন আইজ্যাক নিউটন, ভিক্টর হুগো, বত্তিচেল্লি আর লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মতো বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিবর্গ। এদিকে উগ্র ক্যাথলিক সংগঠন 'ওপাস দাই' সেই সত্যকে চিরতরে নির্মূল করার আগেই এটি হস্তান্তরিত হয়ে যায়।

কাহিনী সংক্ষেপ:
সময়টা রাত ১০:৪৬ ল্যুভর মিউজিয়াম প্যারিস। কিউরেটর জ্যাক সনিয়ে এক রাতে সাইলাস নামের একজন ক্যাথলিক সন্ন্যাসীর হাতে গুলিবিদ্ধ হন। এই সন্ন্যাসী টিচার নামের এক গুপ্ত পরিচয়ের লোকের জন্য কাজ করে। জ্যাক সনিয়ের কাছ থেকে কি স্টোন এর অবস্থান জানতে চাওয়ায় তার সাথে জ্যাক সনিয়র দ্বন্দ্ব শুরু হয়। কারণ, এই কি স্টোনই হল হলি গ্রেইল খুঁজে পাওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র ও আসল নকশা।

জ্যাক সনিয়ে মারা যাওয়ার আগে কোনো এক ইঙ্গিত প্রকাশে তিনি তার নিজের শরীরকে ভিটরুভিয়ান ম্যানের মত আকৃতি করে রাখেন এবং কিছু গুপ্ত সংকেত এঁকে যান। পুলিশ এসে মৃত দেহ উদ্ধার করে এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এর ধর্মীয় প্রতীক বিদ্যার অধ্যাপক রবার্ট ল্যাংডনকে ডেকে পাঠায় জ্যাক সনিয়ের সেই গুপ্ত সংকেতের রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য। ঘটনাক্রমে রবার্ট ল্যাংডনের কাছে পুলিশের ক্যাপ্টেন বেজু ফশে সাহায্য চান। এদিকে পুলিশের ক্রিপ্টোগ্রাফার সোফি নেভু ল্যাংডনকে জানান যে এই জ্যাক সনিয়ে তার দাদু। অনেক বছর ধরে তাদের কারো সাথে কারোর যোগাযোগ নেই। সোফি ল্যাংডনকে জানান, তার দাদু যে গুপ্ত সংকেত লিখে গিয়েছেন এটা একটি লাইনে লেখা ছিল: ''ওহ ড্রাকোনিয়ান ডেভিল, O lame saint."

পরে সেই সংকেতের জট খুলতে গিয়ে সেখানে তারা খুঁজে পায় একটি অদ্ভুত বাক্স। বাক্সটিতে পাওয়া যায় অদ্ভুত ক্রিপটেক্স। কিন্তু তাদের হতাশ করে সেই ক্রিপটেক্সটার ভেতরে পাওয়া যায় আরও একটা ক্রিপটেক্স, আরও একটা ধাঁধাঁ। তারা বুঝতে পারে যে এই ধাঁধাঁর সমাধানের জন্য তাদেরকে শেষপর্যন্ত ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবিতে স্যার আইজাক নিউটনের সমাধিতে যেতে হবে। পরবর্তীতে তারা সেই দুই হাজার বছরের পুরনো ভয়াবহ গোপন তথ্য জেনে যান এবং হলি গ্রেইল এর সন্ধানে পদে পদে বিপদের মুখোমুখি হতে থাকেন।যার ফলশ্রুতিতে বেরিয়ে আসে যিশুর সাথে ম্যারি ম্যাগদালিন এর বিয়ে হয়েছে কি হয়নি এ নিয়ে আশ্চর্যজনক ঘটনা এবং 'প্রায়োরি অব সাইওন' এবং 'ওপাস দাই' এর মধ্যকার চলমান এক দ্বন্দ্বের কথা।

পাঠ প্রতিক্রিয়া:
Washington Post এর রিভিউতে বলা হয়েছে 'দ্য দা ভিঞ্চি কোড' বইটি পড়ে যদি আপনার নাড়িস্পন্দন বাড়াতে না পারে, তবে আপনার উচিত ডাক্তার দেখানো।" আমি বলল সত্যিই তাই। কেননা পাঠকের মনোজগত নাড়িয়ে, হৃদস্পন্দন কাঁপিয়ে দেবার ক্ষমতা রাখে বইটি। শ্বাসরুদ্ধকর হয়ে বইটি পড়েছি। পৃথিবীর ইতিহাসের কিছু বিস্ফোরিত সত্য লেখা বইটা তে।

ব্যক্তিগত মন্তব্য:
আপনার ভেতরে যদি রহস্য নিয়ে খেলার উদ্দীপনা থাকে তাহলে এই বইটি আসলেই মগজকে নাড়িয়ে দেবার মতোই বই লেখকের উপস্থাপনায়; ভিট্রুভিয়ান ম্যান, ফিবোনাচ্চি অনুক্রম, প্রাচীন দেবী, বত্তিচেল্লি আর লিওনার্দো দা ভিঞ্চির শিল্পকর্মের ধাঁধা, নিউটন আর হুগোর জটিল রূপ, শয়তান পূজা, প্যাগানিজম, জুরিখ ডিপোজিটরি, ল্যুভ মিউজিয়াম, ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবি, পেন্টাকল দেবী, জটিল সকল অঙ্ক কষতে আপনাকে ম্যাথমেটিশিয়ান হতে হবে না, বরং করেই ছাড়বেই।

বই: দ্য দা ভিঞ্চি কোড
লেখক: ড্যান ব্রাউন
অনুবাদক: মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
প্রকাশনা:বাতিঘর
মূল্য: ৪০০টাকা
পৃষ্ঠা: ৪৩০ পৃষ্ঠা

বই পর্যালোচক: রিজয়না কামাল 
শিক্ষার্থী, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন