BoiPallab Group

নির্বাচিত গল্প ০১ - বই পড়া শুরুর গল্প

 

বই পড়া শুরুর গল্প

খুব ছোটোবেলায়, বইয়ের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয় আমার অক্ষরজ্ঞান প্রাপ্তির আগেই। মা তখন মীনা-রাজু, রাক্ষস-খোক্ষসের গল্পের বই পড়ে শোনাতো। নিজে পড়তে শেখার পর সেসব বই দিয়েই আমার বই পড়ার শুরু। 

আমি গল্পের বই পড়তে ভালোবাসতাম আমি। বাজারে গেলে বাবা-মা যখন শাকসবজি কিনতো, আমি তখন কাছেই একটা বই বিতানের দিকে ছুটে যেতাম। নাড়াচাড়া করতে করতেই পাতলা পাতলা গল্পের বই পড়ে ফেলতাম। দোকানের আঙ্কেল টের পেয়ে বিরক্ত হতেন।

তারপরে মনে পড়ে, ক্লাস থ্রিতে পড়ার সময়ে একবার নানুবাসায় মামার টেবিলের ওপর দেখলাম একটা বই। নাম 'মেয়েটির নাম নারীনা'। লেখকের নাম মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। মামার কাছে জেনে নিলাম, আমি ওটা পড়তে পারি কিনা। মামা বললো পড়তে। পড়লাম। 
সে-ই আমার ছোট্ট বই রেখে একটু বড় বই পড়া শুরু। তারপর একে একে মুজাই-র 'প্রডিজি', 'ব্ল্যাকহোলের বাচ্চা', 'কাজলের দিনরাত্রি'সহ আরও অনেক বই পড়া হলো। পড়া হলো ফেলুদা। হুমায়ূন আহমেদ পড়তাম না তখনও, মামার কাছে হুমায়ূন আহমেদের লেখা কোনো বাচ্চাদের বই ছিলো না। হুমায়ূন আহমেদ পড়তে শুরু করি ক্লাস সিক্সে উঠে। হাইস্কুল আমি পড়েছি রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে। স্কুলের 'নজরুল গ্রন্থাগার' আমাকে হরেক লেখকের হরেকরকম বই পড়ার সুযোগ দেয়। আমার প্রায়ই আফসোস হয়, সুযোগটার আরেকটু সদ্ব্যবহার বোধহয় করা যেতো।

একটা কথা প্রচলিত এমন—দিল্লীর লাড্ডু খেলেও পস্তাবে, না খেলেও পস্তাবে৷ বই পড়া হচ্ছে এমনই এক দিল্লীর লাড্ডু। পড়লে নেশা হয়ে যায়, পিপাসা বাড়ে। না পড়লে জ্ঞান-অনুভূতির এক আশ্চর্য জগতের সাথে পরিচয়ের সুযোগ অধরা রয়ে যায়। পড়ার ফলে হওয়া নেশাটা ইতিবাচকই হয় সচরাচর।
 
আমার নেশা চলছে এখনও, আশা রাখি জীবনাবসান পর্যন্ত এই নেশা আমার সাথী হবে। আমার ব্যক্তিগত লক্ষ্য—গত দুই শতাব্দীতে বাংলা ভাষায় রচিত মোটামুটি সব ফিকশন পড়ে ফেলা, আর সেইসাথে বিশ্বসাহিত্যের দরবারে বহুল আলোচিত বইগুলিও পড়া। 

➤ বই পড়া শুরুর গল্প
নাম: মোছাঃ মেহজাবীন হাসান হৃদি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ
(এইচএসসি '২২ ব্যাচ)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন